শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৯:৫৯ অপরাহ্ন
ক্রীড়া ডেস্ক : কাতার বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে আজ রাতে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে আলবিসেলেস্তেদের প্রতিপক্ষ গত আসরের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া। লড়াই হবে ধুন্ধুমার, তা অনুমেয়। ম্যাচের মধ্যেও হবে খণ্ড খণ্ড লড়াই। দেখে নেওয়া যাক এই ম্যাচে কী হতে পারে টার্নিং পয়েন্টগুলো।
মেসি নাকি মদরিচ জাদু?
লিওনেল মেসির শেষ বিশ্বকাপ। তবে এই বিশ্বকাপেই বেশি দুরন্ত দেখা যাচ্ছে ফুটবলের খুদে জাদুকরকে। ইতোমধ্যে ৫ ম্যাচে করেছেন চারটি গোল। অ্যাসিস্টও করেছেন বেশক’টি। সব মিলিয়ে আজকের ম্যাচে ক্রোয়াটদের সামনে মূর্তিমান আতঙ্ক লিওনেল মেসিই। তাকে কঠোর পাহারা দেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার কোচ দালিচ। কীভাবে মেসিকে সামলাবেন তারা। মেসির ওপর একটি নির্দিষ্ট ম্যান-মার্কার রাখার সম্ভাবনা কম। কারণ, ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ড এমনিতেই বেশ শক্তিশালী।
মার্সেলো ব্রোজোভিচরা বেশ রক্ষণাত্মক ভূমিকা পালন করেন। মেসিকে আটকানোর চেষ্টা থাকবে তাদেরই। তবে মাতেও কোভাসিচ ব্রাজিলের বিরুদ্ধে রক্ষণভাগে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছিলেন। সেমির ম্যাচেও তাকে একই ভূমিকায় দেখা যাবে ভালোমতো।
লুকা মদরিচ একাধারে ক্রোয়েশিয়ার অধিনায়ক। আবার প্লে মেকারও। মাঝ মাঠ থেকে শুরু করে তার বিচরণ সব জায়গায়। আর্জেন্টিনার জন্য হুমকি ৩৭ বছর বয়সী এই ফুটবলার। বলের দখল বজায় রাখা, প্রতিপক্ষের গতি নিয়ন্ত্রণ রাখাসহ নিজ দলকে প্রতিপক্ষের রক্ষণে হামলে পড়ার কৌশলটা বেশ ভালো জানা মদরিচের।
মানসিক শক্তি বনাম ক্লান্তি?
গত রাশিয়া বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়া নকআউট পর্বে প্রতিটি খেলা জিতেছে অতিরিক্ত সময়ে। দুইবার পেনাল্টিতেও। ৯০ মিনিটের পরও অতিরিক্ত ৩০ মিনিট ক্রোয়াটদের খেলার শক্তি বেশ নজরকাড়া।
এবার জাপান ও ব্রাজিল উভয় দলের বিরুদ্ধে গোল হজম করেও খেলায় ফিরে এসেছে দলটি। দুই ম্যাচেই ক্রোয়েশিয়া জিতেছে টাইব্রেকারে। সেই চিত্তাকর্ষক মানসিক শক্তি কি আবার দেখা যাবে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধেও। নাকি ক্লান্তি ভর করতে পারে মদরিচদের ওপর।
যদিও এদিক থেকে আর্জেন্টিনাও কম নয়। কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচেও তাদের লড়াই করতে হয়েছে ১২০ মিনিট। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারেই নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে সেমিতে উঠে এসেছে মেসির আর্জেন্টিনা। আজকের ম্যাচে অতিরিক্ত সময়ের খেলা ও টাইব্রেকার হতে পারে টার্নিং পয়েন্ট।
আর্জেন্টিনার দ্বাদশ খেলোয়াড় দর্শক
কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে লুসাইল স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনাকে সমর্থন জানাতে উপস্থিত ছিল প্রায় ৪০ হাজার দর্শক। সেই তুলনায় ডাচদের সমর্থক ছিল পুরো স্টেডিয়ামে হাতে গোনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে। খুব একটা আলোড়ন তুলতে পারেনি তারা।কিন্তু সেই তুলনায় আর্জেন্টিনার সমর্থকরা নাচে-গানে সারাক্ষণ দলকে উদ্বুদ্ধ করে গেছে, যা ফুটবল ম্যাচে যে কোনো দলকে উজ্জীবিত করে পুরোদমে। গবেষণায় তা প্রমাণিত।
আজকের আর্জেন্টিনা-ক্রোয়েশিয়া ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে কোয়ার্টারের মতো লুসাইল স্টেডিয়ামেই। আগের ম্যাচের তুলনায় এবার আরও বেশি আর্জেন্টাইন সমর্থকের কোরাশ ধ্বনি আন্দোলিত করবে স্টেডিয়াম, যা ক্রোয়েশিয়ার চেয়ে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে রাখছে অনেকটাই।
সুপার সাবদের ঝলসে ওঠা
ব্রাজিলের ম্যাচে শুরুতে ক্রোয়েশিয়ার একাদশে খেলেছেন সেন্টার ফরোয়ার্ড আন্দ্রেস ক্রামারিচ। পরে তার বদলি হিসেবে নেমে দারুণ এক গোলে ম্যাচে সমতা আনেন ব্রুনো পেটকোভিচ। যে গোলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। জেতে ক্রোয়েশিয়া।
নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে শুরুটা করেছিলেন হুলিয়ান আলভারেজ। তার বদলি হিসেবে পরে নামেন লাওতারো মার্টিনেজ। টাইব্রেকারে এই মার্টিনেজের গোলে সেমির টিকিট পায় আর্জেন্টিনা। আজকের সেমির ম্যাচে সুপার সাবদের তাই জ্বলে ওঠার রয়েছে দারুণ সুযোগ। তারা হতে পারেন ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।